১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।৩০শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।শনিবার

রাজস্থলীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী দুর্গম গ্রামের লোকেরা করোনা টিকা কে এখনো ভ্রান্ত ধারণা।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ইথোয়াইমং মারমা রাজস্থলী ( রাংগামাটি) প্রতিনিধি ।

রাঙ্গামাটি জেলাতে রাজস্থলী উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র উপায় পাহাড়ি আঁকাবাঁকা উচু নিচু পাহাড় পায়ে হাটা পথ দূর্গম এলাকাটি। যোগাযোগ কোনও কোনও অংশে এতটাই দূর্গম যে এখনও উপজেলা সদরে আসতেই কিছু গ্রাম হতে দেড় থেকে দুদিন সময় লেগে যায়। সেখানে বিদ্যুৎ নেই, নেই কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক ও। ফলে এখনও তারা দেশে থেকেও নিজেদের গৃহ বন্দি হিসেবে রয়েছে। সে গ্রামের লোকেরা এখনো পূর্বে পুরুষে আদিকালে ভ্রান্ত ধারণা কুসংস্কার বিশ্বাস রয়ে গেছে। রাজস্থলী উপজেলার এই দূর্গম এলাকার মানুষ কি করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের সুবিধার আওতায় আসবেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

স্থানীয়রা জানান, ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন ও গাইন্দ্যা ইউনিয়নের কিছু এলাকা আছে এ সব গ্রাম থেকে উপজেলা সদরে আসতে হয় একমাত্র পায়ে হেঁটে। অরণ্য কত যে,বন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পায়ে হেঁটে আসতে একদিন সময় লাগে তাদের। সারা দেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও তেমন কোনও উন্নয়নের ছোয়া এখনও এসব দুর্গম এলাকায় চোখে পড়ে না।

অপর দিকে রাঙ্গামাটির রাজস্থলীর পাশা পাশি বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের বিদ্যুতের সুবিধা ও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের কোনও সুবিধা নেই। গ্রামের এসব সাধারণ মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে শুধু হাটের দিন দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা ও রাজস্থলীতে আসে।

এদিকে, সরকার সারাদেশে করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করেছে। ফলে সুবিধা বঞ্চিত দূর্গম পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারীরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখনও অনেকের মধ্যে টিকা গ্রহণের বিষয়ে কোনও ভালো ধারণা নেই। কেউ কেউ টিকার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানিয়েছেন। আবার অনেকের ইচ্ছে থাকলেও দূর্গম এলাকা থেকে টিকা নিতে অনীহা গ্রকাশ করছেন।

 

 

 

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ, রুইহলাঅং মারমা জানান, স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে ওইসব মানুষকে টিকা নেওয়ার বিষয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দূর্গম কিস্ত পাড়া ও ভুটাম পাড়ার স্থায়ীবাসিন্দারা এ প্রতিবেদককে বলেন, ইপিআই যেভাবে টিকা কার্যক্রম চালায় যদি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে সে ভাবে ভ্যাকসিন কার্যক্রম করা যায় তাহলে আমাদের এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা অসহায় দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষজনকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হতে পারে।

১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান স্বরসতি ত্রিপুরার সাথে কতজন লোক ভ্যাকসিন নিয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় ৪ হাজার হতে সারে ৪ হাজার মানুষ বসবাস করে। পুরো ইউনিয়নটি দুর্গম এবং কিছু গ্রাম আছে যেমন, বিলাইছড়ি সীমান্ত জান্দি মইন, মাঘাইন পাড়া, পূর্নবাসন, শীল ছড়ি, দোসড়ি, কিস্ত পাড়া, বলিপাড়া, হাতিছড়া, ভুটাম পাড়া, এসব এলাকা থেকে উপজেলা সদরে আসতে ৭/৮ঘণ্টা সময় লাগে। অনেকের ইচ্ছে থাকলেও দূর্গম পথের কারণে আসতে চাচ্ছে না। বর্ষা কালে আসার কোন সুযোগ থাকে না। এলাকার মেম্বার কার্বারী ও গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে এলাকায় খবর পাঠিয়েছি যদি কেউ ভ্যাকসিন নিতে চায় তাহলে উপজেলায় এসে রেজিস্ট্রেশন করে ভ্যাকসিন নিতে পারবে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকেই বর্তমানে কোন অস্তিকর ভোগ করছেন না। সবাই সুস্থ আছেন।

করোনা ভ্যাকসিন সম্পর্কে এলাকার লোকজন কতটুকু জানেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামের কিছু শিক্ষিত লোক আছে তারা কিছুটা জানতে পারেন। তবে সবার জানার সুযোগ নেই। কারণ দূর্গম এলাকা থেকে উপজেলায় আসতে পায়ে হেঁটে সময় লাগে একদিন। গ্রামের সবাই জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা সব বিষয়ে খোঁজখবর রাখেও না। নিজেরা পায়ে হেঁটে গিয়ে কোনও মানুষকে বললে তখন তারা জানতে পারবে। আবার গ্রামের কিছু কিছু পাহাড়ে ওপরে মোবাইল নেট ওর্য়াক পাওয়া যায় কারও জরুরি প্রয়োজন হলে সেখানে উঠে ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার মানুষ একদিন ধরে পায়ে হেঁটে ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করতে পারে। ফলে দূর্গম এলাকায় বিশেষ বিবেচনায় করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে সরকারের ঘোষিত কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী। না হয় করোনা ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হবে দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের জনসাধারন।

দুর দুরান্ত থেকে ভ্যাকসিন নিতে আসা লোকজনকে খাওয়া ও থাকার বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমার সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আগামী ৭ তারিখ থেকে মহল্লায় মহল্লায় স্বাস্থ্য কর্মীরা টিকা দিতে যাবে। অতএব তাদের কোন সমস্যা হবেনা বলে মনে করেন তিনি। সে গ্রামের অশিক্ষিত লোক বেশি দেখা যায়। তবে তাদের এত দুর এসে রাত্রি যাপন করতে হবে না বলে তিনি জানান।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।