৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।রবিবার

রংপুর জেলা যুবলীগের কমিটি না থাকায় দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা : হতাশ তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রংপুর জেলা যুবলীগের কমিটি না থাকায় দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা : হতাশ তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
রংপুর প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকায় রংপুর জেলা যুবলীগের দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্র থেকে একাধিকবার সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন রংপুর জেলা যুবলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা জেলা যুবলীগের সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। সেই সাথে দ্রুত সময়ের তা বাস্তবায়ন করারও দাবি জানান। নেতাকর্মীরা বলেছেন, নেতৃত্ব বিকাশ এবং সংগঠনে গতিশীলতা তৈরিতে নতুন নেতৃত্ব তৈরির বিকল্প কিছুই নেই। রংপুর জেলায় সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। রংপুর জেলা যুবলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর এইচএম রাশেদুন্নবী জুয়েলকে আহবায়ক করে ৩১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি যুবলীগ। সেই আহবায়ক কমিটি গঠনের সাড়ে ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও দলীয় কার্যক্রমে কোন গতি আনতে পারেনি। জেলায় সম্মেলনতো দুরের কথা উপজেলা পর্যায়েও কমিটি দিতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে তৎকালীন যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ২০১৮ সালের ১৪ মে জেলার আহবায়ককে অগঠনতান্ত্রিকভাবে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কারণ দর্শনানোর নোটিশ দিয়ে রংপুর জেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। সেই সাথে জেলার রংপুর সদর, গঙ্গাচড়া, মিঠাপুকুর ও তারাগঞ্জ উপজেলার কমিটিও বাতিল ঘোষণা করে। তৎকালীন যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে এসব তথ্য জানানো হয়। এর পরেই ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলে এক সড়ক দুর্ঘটনায় জেলা যুবলীগের আহবায়ক এইচএম রাশেদুন্নবী জুয়েল মারা যান। সেই থেকে জেলা যুবলীগের কমিটি স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। কেন্দ্র থেকেও কমিটির স্থগিত আদেশ প্রত্যাহার কিংবা অন্য কাউকে দায়িত্বও দেয়া হয়নি। এতে অবস্থায় বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগ রংপুরে প্রায় ৩ বছরের বেশী ধরে কমিটি বিহীন অবস্থায় চলছে। তবে স্থগিত কমিটির নেতারা নিজেদের পদ বহাল দাবি করে মাঝে মধ্যে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেন। এনিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি রংপুর জেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। সেই স্থগিতাদেশ আজও প্রত্যাহার করেনি কেন্দ্রীয় যুবলীগ। তার পরেও জেলা যুবলীগে অনেকেই আহবায়কসহ বিভিন্ন পদ দাবি করে আসছেন। যা সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক। এনিয়ে যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। এদিকে দলের নেতাকার্মীরা আরও জানান, রংপুর জেলা যুবলীগের কমিটি নেই প্রায় ৩ বছরের বেশী সময় ধরে। এমন চিত্র জেলার অধিকাংশ উপজেলায়। পদ-পদবী কিংবা কমিটি না থাকায় নেতাকর্মীরাও খুব একটা দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে চান না। একারণে জেলাসহ উপজেলায় তেমন একটা দলীয় কর্মসূচী পালনও হয়না। এর ফলে জেলা যুবলীগের দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ঝিমিয়ে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। দলীয় সংকট উত্তরণে জেলায় দ্রæত কমিটি গঠনের দাবি তোলেনও তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব, কর্মী বান্ধব এবং সরাসরি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা নেতাদের জেলা যুবলীগের কমিটিতে শীর্ষপদে রাখলে দলের কার্যক্রমে গতি আসবে বলে মনে তারা করেন। জেলা যুবলীগের কয়েকজন নেতা জানান, সম্মেলন দেয়া অথবা নতুন কমিটি গঠনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটির। তারা চাইলে সম্ভব। এজন্য অবশ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের ভূমিকাও রাখতে হবে। তবে নেতৃত্ব বিকাশের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদে সম্মেলন বা কমিটি গঠন হওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন তারা। দলের একটি সূত্র আরও জানায়, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ও ১৯ মার্চ কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতারা রংপুর সফরে আসেন। এসময় তারা পৃথক ভাবে কর্মীসভা ও বর্ধিতসভা করেন। সেসময় নতুন কমিটি গঠনের দাবি তোলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও তাতে সায় দেয়। তারা কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে রংপুর জেলা যুবলীগের কমিটি গঠন বিষয়ে আলোচনা করবেন বলেও আশ্বাস দেন। কিন্তু দির্ঘদিনেও নতুন কমিটি গঠনের উদ্যাগ দেখা যায়নি। রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক অন্যতম সদস্য,ও রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য, রংপুর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শ্রী নিতাই মহন্ত চন্দন, জানান দীর্ঘদিন ধরে রংপুর জেলায় কমিটি না থাকায়, অনেক অনুপ্রবেশকারী মাদকাসক্ত, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, জেলা যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেক অপকর্ম সঙ্গে লিপ্ত হয়েছেন, যার দায়ভার এসে পড়ছে বর্তমান মানবিক খ্যাত যুবলীগের আদর্শিক নেতা কর্মীদের উপরে। যার ফলে রংপুরের রাজনীতিতে এক বিরূপ মন্তব্য সৃষ্টি হয়েছে, রংপুর জেলা যুবলীগ নিয়ে তাই আমি জোর দাবি জানাচ্ছি, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তারা যেন দ্রুত রংপুর জেলা যুবলীগের ব্যাপারে একটি ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত দেন। যার মাধ্যমে রংপুরে একটি মানবিক যুবলীগ প্রতিষ্ঠা হবে ইনশাআল্লাহ। রংপুর জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মাসুদ রানা বিপ্লব জানান, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কমিটি চায়। আমরাও চাই নতুন কমিটি হোক, নতুন নেতৃত্ব তৈরি হোক। রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিকুল জানান, আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষে যুবলীগ করেছি। রংপুর জেলায় দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের কমিটি নেই। একারণে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। এতে অনেক প্রতিভা অকালেই ঝরে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ করা অনেক নেতাকর্মী ঝিমিয়ে পড়েছে। জেলায় যুবলীগের কমিটি গঠন করে সাবেক ছাত্রনেতাদের মূল্যায়নের দাবি জানান তিনি। রংপুর জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ওয়াসিমুল বারী শিমু ও শিপন আহমেদ জানান, জেলা যুবলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন ও নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। সবাই চায় ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতারা কমিটিতে যেন স্থান পান।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।