রংপুরে তৃতীয় লিঙ্গের কম্বল মাস্ক বিতরণ করলেন, হিজড়া সংগঠনের নেতা রানা।
রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ।
রংপুর নগরীতে আবারও হিজড়া সংগঠনের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম (রানা) ৫০০ অসহায় পরিবারের মাঝে মাস্ক এবং কম্বল বিতরণ করেন।
বুধবার (১২ই জানুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে রবার্টসনগঞ্জ স্কুল মাঠে কম্বল এবং মাস্ক বিরণ করে রংপুর বিভাগের হিজড়া সংগঠনের নেতা রানা। তিনি এর আগেও গত রবিবার নূরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আরো ৪০০ পিস কম্বল ও মাস্ক বিতরণ করেছেন। এছাড়াও গত ০২ জানুয়ারী নগরীর জুম্মাপাড়ার এক হার্টের রোগীকে চিকিৎসার জন্য নগদ ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকা অর্থ সহায়তা করেন রানা ।
এসময়ে উপস্থিত থেকে হিজড়া সংগঠনের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম (রানা) বলেন, অমি ছোটবেলা যখন নিশ্চিত হয়েছি যে, আমি একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। আমার কখনো সংসার/সত্তান হবে না। তাই তখন থেকে আমি নিজেকে মানুষের সেবায় উৎসর্গ করে দিয়েছি। আমি ১২ বছর পূর্বে আমার মতো ৩৭০ জন সদস্যকে নিয়ে ন্যায় অধিকার তৃতীয় লিঙ্গ উন্নয়ন সংস্থা রংপুর নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি। ৩৭০জন সদস্যের মধ্যে ১৫০ জনকে সমাজ সেবার মাধ্যমে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষন করিয়েছি। প্রশিক্ষনের পর প্রায় ২০ জন হিজড়া সদস্য ভিক্ষা বৃত্তি থেকে বেড়িয়ে কর্মমূখী হয়ে সুষ্ঠু জীবন যাপন করছে। আমি আশা করি, আমাদের সবাই একদিন ভিক্ষা বৃত্তি থেকে বেড়িয়ে কর্মমূখী হয়ে মাথা উচু করে বাঁচবে। আমি সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
পাশাপাশি আমি প্রতিবছর ঈদে আমার সামর্থ অনুযায়ী শাড়ী/লুঙ্গি এবং দূর্ভোগের সময়ে খাদ্য সহায়তা অসহায় মানুষে মাঝে বিলিয়ে দেই। মানুষের সেবা করতে পারলে আমার খুব আনন্দ অনুভব হয়। সারা জীবন যেন মানুষের সেবা করে যেতে পারি। সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।
তিনি আরো বলেন, প্রিয় রংপুরবাসীকে আমি একটি আধুনিক এবং পরিবেশ বান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। জনগণ যদি আমাকে সমর্থণ করে, তাহলে আগামী রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি অংশ গ্রহণ করব।
আনোয়ারুল ইসলাম রানার মা জুলেখা বেগম বলেন, রানাকে নিয়ে সমাজের কিছু মানুষের অনেক রকম কটুকথা শুনতে হয়। রানা নিজে অবহেলিত হবার পরেও সমাজের মানুষের কথা ভাবে। ছোট থেকে দুখী মানুষের পাশে দাড়ায়। এমন সন্তানের মা হয়ে আমি নিজেকে গর্ববোধ করি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, আনোয়ারুল ইসলাম রানা’র মতো একজন ভাল মানুষ আমাদের সভাপতি হিসেবে পেয়ে আমরা খুব খুশি। সভাপতি একজন পরোপকারী মানুষ। তিনি বরাবর আমাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও উপকার করেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সোনালী, খপিরোন, শাহানাজ, সুমাইয়া, সীমা, নূপুর, ফরিদা, রাবেয়া, নুসরাত, মনিষা, শান্তা, জাহেদা, নিশি প্রমূখ।
Leave a Reply