১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

রংপুরের কাউনিয়ায় ভাঙ্গা ব্রিজ পারাপারে পাঁচ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রিয়াজুল হক সাগর রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

রংপুরের কাউনিয়ায় আজমখাঁ গ্রামে তিস্তার শাখা মানস নদীর ওপর পাকা ব্রিজটি ধসে গিয়ে পাঁচ বছর ধরে পানিতে তুলিয়ে পড়ে আছে। ব্রিজের উভয় পার্শের সংযোগ সড়কও ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় ভাঙ্গা ব্রিজে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সুত্র জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এডিপি প্রকল্পের অর্থায়নে টেপামধুপুর ইউনিয়নের আজমখাঁ গ্রামে মানস নদীর ওপরে ১৮ ফুটের দীর্ঘ আরসিসি বক্স কালভাট নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের বন্যায় ব্রিজটির পশ্চিম অংশ পুরোটা ধসে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায় এবং ব্রিজটির উভয়পাশে সড়ক ভেঙে যায়। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজন ভাঙ্গা ব্রিজের দুই পার্শে কাঠের সাঁকো তৈরী করে পারাপার করছে।

সরেজমিনে আজমখাঁ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের বন্যায় দেবে যাওয়া ব্রিজটির একাংশ পাঁচ বছর ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। সংযোগ সড়কও ভেঙ্গে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজের উভয় পার্শে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে পাচঁ গ্রামের মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে পারাপার করছে।

ব্রিজের পুর্বপার্শ্বে উপজেলার আজমখাঁ, গনাই, হয়বৎখাঁর গ্রামের একাংশ ও রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ, পীরগাছা উপজেলার রামসিং গ্রামের একাংশ রয়েছে। আর ব্রিজের পশ্চিমপার্শ্বে দুইটি হাট, দুইটি মাধ্যমিক বিদ্যালায়, একটি মাদ্রাসাসহ বেশকয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালায় এবং একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ভাঙ্গা ব্রিজের ওপরে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঝুঁকিপুর্ন সাঁকো পারাপারে পিছলে পড়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও ভ্যানচালকদের নদীর পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এই পথ ছাড়া আর বিকল্প কোন পথ নাই। ব্রিজটির পূর্বপার্শ্বের গ্রামের শেষ সীমান্তে তিস্তা নদী।

টেপামধুপুর ইউপি সদস্য আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজের পুর্বপার্শ্বে গ্রামের বাসিন্দাদের উপজেলা সদরসহ হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে এটি একমাত্র সড়ক। কিন্তু ২০১৭ সালে বন্যায় ব্রিজ ও সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ব্রিজের ওই পাড়ের হাজারও মানুষদের যাতায়াতে চরম দুভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আজমখাঁ গ্রামের বাসিন্দা নাছের আলী বলেন, ভেঙে যাওয়া ব্রিজ ও সড়ক সংস্কার না করায় নরবরে কাঠের সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় প্রায় নদীতে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। ঘাড়ে করে কাঠের সাঁকো ও ভাঙ্গা ব্রিজ পার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।

রামসিং গ্রামের বাসিন্দা আলী আকবর বলেন, এই রাস্তাটি ছাড়া শহর ও হাট-বাজারে যাতায়াতের বিকল্প কোন রাস্তা নাই।

আজমখাঁ গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল হালিম সহ বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, ভাঙ্গা ব্রিজের ওপর দিয়ে কোনো পণ্যবোঝাই গাড়ি পারাপার হতে পারে না। ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যেতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।

হয়বৎখাঁ গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, তিন উপজেলার পাঁচ গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের একমাত্র সড়কে ব্রিজটি ধসে গিয়ে পাঁচ বছর ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। অথচ গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগ উন্নয়ণে ব্রিজটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, আজমখাঁ গ্রামে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজ ও সংযোগ সড়ক সংস্কার হওয়া খুবই জরুরি।

উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বেশকয়েকটি ব্রিজের প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে টেন্ডারের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজগুলো নির্মাণ কাজের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।