বৃষ্টির বিরাম নেই, অঝোর ধারায় টানা দুইদিন ঝুম বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। সেই সাথে
মাগুরার মহম্মদপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’এর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে উদ্বেগ বাড়ছে ধান চাষিদের মাঝে। পানিতে ডুবে ধান পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে মহম্মদপুরে টানা দুই দিন বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার সকাল থেকে একটানা বৃষ্টি ঝড়েছে। সেই সঙ্গে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কৃষকরা।
বৃষ্টি ও কৃষকের অশ্রুতে ভিজে এখন একাকার ধান ক্ষেত। উপজেলায় টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির পাকা বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে কৃষকরা দাবি করছেন। প্রায় প্রতিটি গ্রামের মাঠ গুলোতে বৃষ্টির পানিতে ভিজে ক্ষেতের ধান পড়ে আছে মাঠে। ধান ঘরে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানান কৃষকেরা।
রোববার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি-জলাবদ্ধতায় ইতোমধ্যে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির ধান ঠিকমতো ঘরে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কৃষক ধান কেটে জমিতে রেখে দিয়েছে। এসব ধান বৃষ্টির কারনে ঘরে তোলা সম্ভব হয়নি। পানির উপরে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন সোনালী ধান। এখন তাদের মাথায়ছিট হাত। দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষ হয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে। উপজেলায় গড় খাদ্যের চাহিদা রয়েছে ৪৫ হাজার ৩শ ৫০ মেট্রিক টন। গড় হিসাব অনুযায়ী উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে ১৬ হাজার ৫শ ৫০ মেট্রিক টন চাল অতিরিক্ত থাকবে বলে ধারনা ছিল। ওই ধান বিক্রি করে কৃষকের বাড়তি আয়ের আশা করেছিলেন তারা।
হরিনাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হালিম মোল্যা, রিয়াজুল বিশ্বাস,সালাম মোল্যা, উজির মৃধা, মেহেদী হাসান রাব্বি জানান, ‘এ বছর আশা করে কেউ এক বিঘা, কেউ দের বিঘা কেউ তার বেশি জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম। সব ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। অল্প কিছু ধান ঘরে তুলতে পেরেছি। এ বছর ছেলে মেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেলো!’
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রমজানুল আমীন বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ও বোনা আমন জাতের ধান চাষাবাদ হলেও সব ধান প্রায় কাটা ও ঘরে তোলা শেষ। মাত্র ৮ থেকে ১০ হেক্টর জমির ধান কেটে বিচালি করে রাখায় সেটা পানিতে ডুবে গেছে। তবে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে।
Leave a Reply