ফেনী সদর প্রতিনিধিঃ
পাসপোর্ট ফি ব্যতিত অতিরিক্ত টাকা কাউকে প্রদান করবেন না। দালাল প্রতারক হতে সাবধান’ এমন কয়েকটি প্রচারণা দেয়ালে সাঁটানো থাকলেও বাস্তবতা ব্যতিক্রম। ‘চ্যানেল ফি’ ছাড়া সেবা মিলেনা বললেই চলে। নিয়মানুযায়ী সেবা পেতে দালাল চক্র বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেনী শহরের মহিপাল সার্কিট হাউজ সড়কের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের এ চিত্র নিত্যদিনের। সেবা গ্রহিতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, একই কাজে দিনের পর দিন অফিসে ধরনা দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। চ্যানেল ফি এর নামে ১ হাজার ৫শ টাকা না পেলেই অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলাও দায় তাদের। শুধুতাই নয় নির্ধারিত ট্রাভেল এজেন্সির সীল না থাকলে আবেদন গ্রহণও করা হয়না। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট নতুন এবং পাসপোর্ট সংশোধন করতে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হন তারা।
সাংবাদিক এর সাথে কথা হয় সেবা নিতে আসা সোনাগাজীর বাসিন্দা কলেজ ছাত্র শফি উল্যাহর সাথে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় প্রবাসে পাড়ি জমাতে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তিনি। চলতি বছরের গত ১৭ জুন ব্যাংকে সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আবেদন জমা দেন। ৮ জুলাই পাসপোর্ট প্রদানের তারিখ থাকলেও তিন মাস পর্যন্ত তার পাসপোর্ট হাতে পাননি। কিছুদিন পরপর তিনি পাসপোর্ট অফিসে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে ফিরে যান।
শুধু শফিউল্যাহ নয় এমন অনেকে পাসপোর্টের জন্য ধরনা দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানাভাবে হয়রানী করে ফিরিয়ে দেন। মনোয়ারা বেগম, শাহা আকবর, আরাফাত হোসাইন শিমুল সহ ডজনখানেক সেবাগ্রহীতা তাদের হয়রানির তথ্য জানান।
একাধিক সেবাগ্রহীত জানান, পাসপোর্টের জন্য ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন জমা না দিলে গ্রহণ করা হয়না। কিছু আবেদন জমা নিলেও নানা অজুহাতে হয়রানি এমনকি তা ফেরত দেয়া হয়। এছাড়া অফিসের প্রবেশের সময় আনসার সদস্যরা প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তারা টাকা না পেলে তারা অনেককে প্রবেশই করতে দেননা।
পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, ৪৮ পৃষ্ঠা পাসপোর্টের ৫ বছর মেয়াদে নিয়মিত ৪০২৫, জরুরী ৬৩২৫, অতীব জরুরী ৮৬২৫,১০ মেয়াদে নিয়মিত ৫৭৫০, জরুরী ৮০৫০ ও অতীব জরুরী ১০৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু হওয়ার পর নতুন-পুরোনো বিদেশগামীদের সংখ্যা অধিক হারে বেড়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে আবেদন জমা দিতে কিংবা ছবি তুলতে আসা ব্যক্তিদের সারি দীর্ঘ হয়ে কখনো সড়ক পর্যন্ত পৌছে যায়। গত ১ আগস্ট থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ হাজার ৫শ ১৭টি পাসপোর্ট ছাপা হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে ১৫৫৫টি পাসপোর্ট বিভিন্ন জটিলতায় আটকে রয়েছে।
জানতে চাইলে ফেনী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, পাসপোর্ট অফিসে আসা ব্যক্তিদের সেবা দিতে তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন। সার্ভার সমস্যা এমনকি প্রিন্ট হতে দেরি হওয়ায় পাসপোর্ট পেতেও দেরি হয় বলে তার দাবী।
Leave a Reply