সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা।
বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি)প্রতিনিধি-পাহাড়ে বিলুপ্তির পথে হস্ত শিল্প। এইসব হস্ত শিল্প বলতে গেলে তেমন একটা আর দেখা যায় না।খুব কমই ছোখে পড়ে। মাঝে মাঝে হঠাৎ কোনো কোনো জায়গায় দেখা গেলেও বর্তমানে নেই বললে চলে।
ছবি দেখলে বোঝা যায়,এগুলো বেতের তৈরি এক একটি সুনিপুণ হস্তশিল্প। ঝুড়ি কিংবা ব্যাগ বা সরঞ্জামাদি রাখার তৈরি জিনিসপত্র।
স্থানীয় ভাষায় এগুলোকে বলা হয়ে থাকে মেজাং,টুক্যা,দোলইন, ধূলা, কাকঁড়া ধরার ফাঁদ এবং হাসঁ- মুরগী,বিড়াল, শুকরের বাচ্চা ও পাখি রাখার খাঁচা এবং আরো রয়েছে- ঘরে জিনিসপত্র রাখার খাঁচার মধ্যে পাইত্তং, তং,পুইল্ল্যাঙ, পেয়ারা বা,পাইপে,সহ ডিঙা ও মং ইত্যাদি ইত্যাদি।
এগুলো আবার ভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন শব্দ,ভিন্ন ভিন্ন নামও রয়েছে।
এ-সবই বেতের তৈরি এক একটি শিল্পকর্ম।এগুলো সুনিপুণ দক্ষ কারিগর বা হস্ত শিল্পিরা তৈরি করতেন বা তৈরি করে রাখতেন।
এগুলো মুলত আগের দিনের মানুষরা ছোট বয়স হতে খেলতে -খেলতে দেখা -দেখির মাধ্যমে শিখে থাকে।
কথিত আছে-আগের দিনে লোকেরা এগুলো যে বুনতে বা তৈরি করতে পারতো না তাকে সহজে বিয়ে দেওয়া হতো না।সে যুবক হোক বা যুবতী হোক।
যুগের পরিবর্তন ও কাল বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমানে মানুষ এইসব শিল্পের ব্যবহার রেখে নতুন ভাবে শিল্প কারখানা তৈরির কারণে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ব্যাগ থেকে শুরু করে আলমারি ও শোকেস ব্যবহার করছেন।
অনেকে এসব হস্ত শিল্প প্রয়োজন বলে মনে না করলেও অনেকের কাছে অতি প্রিয়। আবার কেউ কেউ প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলেও কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান স্থানীয়রা।
যেমন-একটি নিপুণ হাতে বেতের তৈরি টুপি দাম এখনো ১০০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। একটি দোলনা ৮০০-১০০০ টাকা, অন্যদিকে এক একটি পাইপে বা পুইল্যাঙ ৪০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়।এই পাইপে দিয়ে শিল্পীরা নৃত্যের মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে থাকে।
এজন্য বর্তমানে সুদক্ষ তেমন কোন পেশাদারী কারিগর বা বিক্রেতা না থাকার কারণে এইসব হস্তশিল্প দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে।
তাই,অতী প্রয়োজনে বুড়ো বয়সে বর্তমানে এলাকা ভেদে দুই- একজন ছাড়া তেমন কোন সুনিপুণ হস্তশিল্প তৈরি করা মত লোক বর্তমানে বলতে গেলে পাওয়া যায়না।
Leave a Reply