মাইনুল ইসলাম রাজু
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের আজিমপুর বাজারের মধ্যে একটি দোকানের প্লট নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধে ওই ইউনিয়নের বিসিসিআই সার ডিলার সিদ্দিকুর রহমান মোল্লার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ক্যাশ থেকে নগদ ৫ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এতে বাঁধা প্রদান করায় মালিক ও পার্শ্ববর্তী এক মহিলাসহ ৩ জন গুরুত্বর আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে ওই দোকানের মধ্যে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি।
স্থানীয় ও ভিকটিম জানা গেছে, গত দুই বছর পূর্বে উপজেলার আজিমপুর বাজারে ১৫ শতাংশের দোকানঘরসহ একটি প্লট ওই ইউনিয়নের বিসিসিআই সার ডিলার সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় জমির মালিক বাবুল খানের কাছ থেকে ক্রয় করেন। ওই জমি একই এলাকার এছহাক মীরার পুত্র শহিদুল, শাহীন ও দুলাল মীরা তাদের দাবী করে আজ (শনিবার) সকালে গোপনে জমির প্লটে থাকা দোকান ঘরের মধ্যে কাজ শুরু করেন। সংবাদ পেয়ে জমির মালিক দাবীদার সার ডিলার সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা কাজে বাঁধা প্রদান করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শহীদুল মীরা, শাহিন মীরা, দুলাল মীরা, বজলু মৃধা, হৃদয় মীরা, ছিদ্দিক মীরাসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী মিলে ডিলার সিদ্দিকুর রহমানকে কিল ঘুষি মেরে লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে ধাওয়া করে। এ সময় ডিলার সিদ্দিক মোল্লা প্রাণরক্ষার্থে দৌড়ে তার দোকান ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে সিদ্দিককে পিটিয়ে আহত করে, আসবাবপত্র ভাংচুর এবং দোকানে থাকা ক্যাশ ভেঙ্গে নগদ ৫ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে নিয়ে যায়। এসময় দোকানের মধ্যে টানানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভেঙ্গে নিচে ফেলে দেওয়া হয় বলে সিদ্দিক জানায়।
উভয় পক্ষের মারামারি ছাড়াতে গেলে প্রতিবেশী মুনছুরা বেগম ও তার পুত্র মেহেদী হাসানকেও সন্ত্রাসী পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তখন আহত মুনছুরা বেগমের পড়নে থাকা শাড়ী- বøাউজ ছিড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায় বলে তিনি অভিযোগ করেন। স্বজন ও স্থাণীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আহত মুনছুরা বেগম জানায়, মারামারি দেখে আমি আর আমার ছেলে দৌড়ে ওই সারের দোকানে গিয়ে দেখি ডিলার সিদ্দিক মোল্লাকে শহীদুল মীরা, শাহিন মীরা, দুলাল মীরাসহ ৮/১০ কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পিটাচ্ছে। আমি ও আমার পুত্র ডিলারকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা আমাদেরকেও মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং টেনে হিচরে আমার পড়নে থাকা শাড়ী- বøাউজ ছিড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়।
আহত বিসিসিআই সার ডিলার সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা বলেন, বাজারের মধ্যে আমার কেনা জমির প্লটের ঘরের মধ্যে গোপনে কাজ শুর করতে গেলে আমি তাতে বাঁধা প্রদান করি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আমাকে মারধর করে আহত ও ক্যাশে ভেঙ্গে নগদ ৫ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। আমাকে বাঁচাতে প্রতিবেশী মুনছুরা বেগম ও তার পুত্র মেহেদী হাসান এগিয়ে আসলে তাদেরকেও সন্ত্রাসীরা মেরে মাথা ফাঁটিয়ে দিয়েছে। এসময় দোকানের মধ্যে টানানো বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভেঙ্গে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত দুলাল মীরা মুঠোফোনে বলেন, ওই জমির প্লট বাবুল খানের পিতা ইউনুচ কানের কাছ থেকে আমরা ১৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সেখানে ঘরের কাজ করতে গেলে সার ডিলার সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা ওই জমি তার বলে দাবী করে বাঁধা প্রদান করে। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হালকা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে আমার ভাই শহীদুল মীর গুরুত্বও আহত হয়েছে। সারের দোকান ভাঙ্গা, টাকা লুট, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি। এগুলো সব কিছুই সাজানো।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক সত্যতা পেলে দোষীদেও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply