১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

ফেনীতে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী নাদিয়ার যাবজ্জীবন কারাদন্ড।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ইউসুফ মুন্সী,ফেনী প্রতিনিধিঃ

ফেনীর আলোচিত ব্যবসায়ী কায়সার মাহমুদ হত্যা মামলার একমাত্র আসামী তার স্ত্রী শাহনাজ নাদিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ ড.বেগম জেবুন্নেছা এ রায় প্রদান করেন। এতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছাড়াও আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

 

গত বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহম্মদ জানান, এ মামলায় বিস্তারিত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। আসামীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল।গত ১৫ সেপ্টেম্বর কায়সার হত্যা মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী এ মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ কামরুল ইসলাম খান ও লাশ বহনকারী কন্সটেবল আবদুল মতিনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এ মামলার বাদী প্রফেসর আবুল খায়ের, ম্যাজিস্ট্রেট ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। কায়সার হত্যা মামলায় ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রামপুর ভূইয়া বাড়ি সড়কস্থ নজির সওদাগর বাড়ির প্রফেসর আবুল খায়েরের ছেলে কায়সার মাহমুদের সাথে আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া দৌলতপুর গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে শাহনাজ নাদিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকমাস পর তাদের মধ্যে মনমালিন্য দেখা দেয়। ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ শাহনাজ নাদিয়া কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন লতিফ টাওয়ারে তার বাবার বাসায় বেড়াতে যায়। ১১ এপ্রিল বিকালে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর জন্য কায়সারদের বাসায় আসে। কাওসার সহ নাদিয়া ডাক্তার দেখানোর জন্য বাসা থেকে বের হয়। পরে আর কাওসারের বাসায় ফেরা হয়নি। ওইদিন রাতে ফালাহিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কাওসারকে দূর্বৃত্তরা উপযুপরি ছুরির আঘাত করে পালিয়ে যায়। তখন তার সাথে তার স্ত্রী নাদিয়াও ছিল। পরে তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

 

ময়নাতদন্ত শেষে ১২ এপ্রিল দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ওইদিন রাতে তার পিতা প্রফেসর আবুল খায়ের বাদী হয়ে শাহনাজ নাদিয়া ও তাদের বাড়ির মোঃ হারুনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আলমগীর হোসেন বাসা থেকে শাহনাজ নাদিয়াকে গ্রেফতার করে ১৩ এপ্রিল বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী নেয়। শাহনাজ নাদিয়া ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে কায়সারকে হত্যার কথা স্বীকার করে। সে কায়সারকে একাই হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দী দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ আলমগীর হোসেন চাঁদপুর বদলি হওয়াতে ২০১৪ সালের ৭ জুন মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই কামরুল ইসলামকে।

এ মামলার অপর আসামী বন্দুয়া দৌলতপুর গ্রামের মৃত মোঃ হাফেজের ছেলে মোঃ হারুন একই বছর আগষ্ট মাসে দূর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ হারুন ও নাদিয়াকে অভিযুক্ত করে ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করে। বাদী প্রফেসর আবুল খায়ের আদালতে আপত্তি জানালে পুনঃতদন্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কামরুল ইসলাম নাদিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করে।সে প্রেক্ষিতে আজ আদালত এই রায় দেন।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।