নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের নড়াগাতি থানা পুলিশ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামিকে গ্রেফতার করেছে। একই সময়ে তিন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরো তিন আসামীর পরিচয় ও শনাক্ত করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নড়াগাতি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) ইকরাম হোসেন জানান, স্থানীয় ও হত্যার শিকার রাজু শেখের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত রবিবার (৩অক্টোবর) নড়াগাতির কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া তালুকদার পাড়া এলাকার ধানক্ষেতের ফাঁকা জায়গা থেকে ২৪ বছর বয়সী একজন পুরুষের লাশ মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।এবং তার পরিবারের সদস্য দ্বারা উদ্ধার করা লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরো জানান, নিহতের নাম রাজু শেখ (২৬)। তিনি খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার মহিষাঘুনী গ্রামের ইসলাম শেখের ছেলে। পেশায় ইজিবাইক চালক।
নিহত রাজু শেখ খুলনার রূপসা উপজেলার সেনের বাজার নামক স্থানে নিয়মিত ইজিবাইক চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করত। হত্যার ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে সেনেরবাজার ইজিবাইক স্টান্ড থেকে তিন যুবক ইজিবাইক চালক রাজু শেখের ইজিবাইক রিজার্ভে ভাড়া নিয়ে নড়াইলের নড়াগাতি থানা এলাকার কলাবাড়িয়ার তালুকদার পাড়া এলাকায় আসে। প্রতিমধ্যে রূপসা উপজেলার আব্দুলের মোড় নামকস্থান থেকে আরো তিন যুবক তাদের সাথে(হত্যাকারীদের)যুক্ত হয়। এবং ঘটনাস্থল নড়াগাতি থানার কলাবাড়িয়া তালুকদার পাড়া এলাকায় এসে ইজিবাইক ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে ইজিবাইক চালক রাজু শেখকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে এবং পাশের ধানক্ষেত এই মাটি চাপা দিয়ে ইজি বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনাকারী নড়াগাতি দুই এস আই নাজমুল হাচান ও খাঁন মাহবুব জানান,নড়াগাতি থানার অফিসার ইনচার্জ মোছাঃ রোখছানা খাতুনের নেতৃত্বে আমরা ইজিবাইক ভাড়ার ঘটনাস্থল খুলনার রূপসা উপজেলার সেনের বাজার ইজিবাইক স্থান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ডিজিটাল ডিভাইস ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ৩ জন আসামি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। গত বুধবার রাতে একই সময়ে সনাক্তকৃত তিন আসামীর বাড়িতে আমরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে অভিযান চালিয়ে কলাবাড়িয়া তালুকদার পাড়ার এসকেন তালুকদারের ছেলে আলম তালুকদারকে ও হত্যায় সময় পরিহিত আসামী আলমের একটি শার্ট দেখে সনাক্ত করে গ্রেফতার করি। এবং হত্যার পর মাটি চাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি কোদাল আলামত জব্দ করি।বৃহস্পতিবার (৭অক্টোবর) আসামী আলম তালুকদারকে নড়াইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে মোর্শেদ আলমের আমলী আদালতে সোপর্দ করলে আসামী আলম বিচারক মোর্শেদ আলমের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। নড়াগাতি থানার ওসি মোছাঃ রোখছানা খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
গত ৩অক্টোবর রবিবার লাশ উদ্ধারের পর নিহত রাজু শেখের বাবা ইসলাম শেখ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। এ মামলায় আটক আসামী আলম তালুকদারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ক্লুলেস হত্যা মামলা উদঘাটন বিষয়ে নড়াইল পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন,
আমরা মামলার শুরু থেকেই আসামীদের সনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ ব্যাবহার করে আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হই এবং এক আসামীকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি কোদাল আলামত হিসেবে সংগ্রহ করে স্বামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করি। অন্য আসামীদেরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
নড়াইল পুলিশ সুপার আরো জানান,ইতিপূর্বে ও নড়াগাতি থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোছাঃ রোখছানার নেতৃত্বে আরেকটি ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছিল।
Leave a Reply