শামীম তালুকদার, বিভাগীয় প্রধান, ময়মনসিংহ
নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর পৌরসভার কিশোর নির্মাণ দত্ত ১৫ বছর বয়সেই নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। তার নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মৃন্ময়ী প্রতিমা ধীরে ধীরে দেবী দূর্গা রুপ ধারণ করছে। মন্ত্র পাঠ করে নিজের হাতে গড়া দেবীর পূজা করে এলাকায় সাড়া জাগিয়েছে নির্মাণ দত্ত। নির্মাণ দত্ত দুর্গাপুর পৌরসভার শিবগঞ্জ বাজারের গোপাল দত্ত ও নমিতা দত্তের ছোট ছেলে। ৬ বছর ধরে নিজেই প্রতিমা তৈরি করে পূজা শুরু করে নির্মাণ দত্ত। দূর্গাপুর এম কে সি এম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র নির্মাণ। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি ঝোঁক ছিল তার। বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্হায় প্রতিমা তৈরির সাধ জাগে তার।ওস্তাদ ছাড়াই বাড়িতে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির চেষ্টা করতে থাকে। অবশেষে ২০১৬ সালে তৈরি করেন দূর্গা প্রতিমা। প্রতিভা দেখে অবাক হয়ে যান তার মা-বাবা ও স্বজনরা। এভাবে প্রতি বছরই বাড়ির আঙ্গিনায় মন্ডপ তৈরি করে দুর্গাপূজা উদযাপন করে থাকেন নির্মাণ দত্ত।
নির্মাণ দত্ত প্রায় ১মাসের চেষ্টায় তৈরি করেছেন দূর্গা, কার্তিক,গণেশ, মহিষাসুর, লক্ষীও সরস্বতীর প্রতিমা। রং-তুলির কাজটিও নিজের হাতেই করেন সে। কোন ডাইস বা ফর্মা ছাড়াই নিজ হাতে প্রতিমাগুলোর মুখমন্ডল তৈরি করেছেন নির্মাণ;যা
খুবই অভাবনীয় ব্যাপার। পাল বংশের সন্তান না হয়েও নির্মাণ দত্তের প্রতিমা তৈরির প্রতিভা দেখে বিস্মিত স্হানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
নির্মাণ দত্ত জানান,সে নিজের হাতে গড়া প্রতিমায় পূজো দিবেন।মা-বাবা সহ সকলের আশির্বাদে সে গত ক’বছর ধরে নিজেই প্রতিমা তৈরি করছেন এবং পূজো দিয়ে আসছেন।এবারও নিজের হাতে গড়া প্রতিমায়ই পূজো দিবেন।
ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান,নির্মাণ দত্তের সাহস ও আত্মবিশ্বাস দেখে বেশ অবাক হয়েছেন তারা। প্রতিমা তৈরিতে তার নিখুঁত কাজ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।’যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্হিতা,নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্ত্যৈস্য নমোঃনমঃ।’ এই মন্ত্র পড়ে নির্মাণ দত্ত জানান, নিজ হাতে দেবী দূর্গা বানানোর ইচ্ছা অনেক দিনের। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় ও সকলের আশীর্বাদে আজ সেটা করতে পেরেছেন তিনি। এজন্য তার খুব আনন্দ লাগছে,সকলের নিকট সে আশীর্বাদ কামনা করছেন।
দুর্গাপুর উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানেশ চন্দ্র সাহা বলেন,নির্মাণ কিশোর বয়সে কোনো সাহায্য ছাড়াই দূর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন।বিষয়টি সত্যিই প্রশংসনীয়। তার হাতের ছোঁয়া খুবই নিখুঁত,পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সে আরও ভালো কিছু করতে পারবে সে।
দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, নির্মাণ দত্তের প্রতিভাই তাকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিবে।কারো কাছে প্রতিমা গড়ার কাজ না শিখেই এত নিঁখুতভাবে প্রতিমা তৈরি করা সহজ নয়।শুধু তাই নয় ও খুব ভালো ছবি আঁকে।ওর যে কোন প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন সহায়তা করবে।আমি এই ক্ষুদে শিল্পীর সাফল্য কামনা করছি।
Leave a Reply