ওয়াশিম রাজু , নওগাঁ :
নওগাঁর মান্দায় এবার আখ চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। অল্প বিনিয়োগে অধিক লাভজনক হওয়ায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কৃষক দিন দিন আখ চাষে ঝুঁকছেন। কেউ পাইকারি বাজারে কেউ বা নিজেই খুচরা বিক্রি করে চলছে চাষিদের সংসার। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, সারিসারি লাল-কালো-সবুজের চোখ ধাঁধানো আখের জমি। এবার বন্যার পানি না আসায় বাতাসে দোল দিচ্ছে লম্বা সবুজ পাতায় চাষির ভাগ্য বদলের স্বপ্ন। বর্তমান চাষীদের পাশাপাশি নতুনরাও আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ উপজেলার মাটি এঁটেল দো-আঁশ হওয়ায় এখানে আখ চাষে গত কয়েক বছরে বেশ সফলতা পেয়েছেন চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে মিশ্রি দানা,লতা,ঈশ্বরদী-১৬ ,আচাফারর্ম, বোম্বাইসহ বিভিন্ন জাতের আখের চাষ হয়েছে। তবে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আগাম বন্যায় আখ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার কৃষি বিভাগের পরামর্শে আখ চাষের পরিমাণ বেশি হয়েছে। আখ চাষে সার ও কীটনাশক তেমন ব্যবহার করতে হয় না। তবে তিনবার সেচের প্রয়োজন পড়ে। কম পরিশ্রমে ও অল্প ব্যয়ে বেশি সফলতা পাওয়ায় এখানে কৃষকরা আখ চাষে বেশ আগ্রহী হচ্ছেন৷
উপজেলার চকভোলাই গ্রামের কৃষক আজাহার প্রামানিক বলেন,গত বছর আগাম বন্যায় আখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। গতবার লোকসান হলেও এবার আখের বাম্পার ফলন হয়েছে তার। ২৫ কাটা জমিতে আখ চাষ করতে খরচ হয়েছে ২০/২৫ হাজার টাকা৷ সেখান থেকে তিনি এক লক্ষ টাকার আখ বিক্রয় করবেন বলে আশা করেন৷
আর এক কৃষক কাজেম উদ্দিন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আখের ফলন ভালো। করোনাভাইরাসে লকডাউনে সব কিছু লোকসানের দিকে গেলেও আখ সহজে পচে নষ্ট হয় না। ফলে এবার আখ চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পাবো। পরিবারের আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে ভালোভাবে সংসার চালাতে পারবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন জানান, এই উপজেলার মাটির গুণগত মান ভালো। তাই সময়মতো আখ রোপণ করতে পারলে ফলনও ভালো হয়। বর্তমানে ধান ও অন্যান্য শাক-সবজির তুলনায় আখ চাষে খরচ কম তাই আবারো আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে চাষীরা৷
তিনি আরো বলেন ,আখ খুব লাভজনক এবং এবার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আবহাওয়া বুঝে লাল পচা এবং মাঝরা পোকা রোগ ছাড়া তেমন কোনো জটিল রোগ নেই। উপজেলার আখ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। চাষিদের জন্য সকল প্রকার পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত আছে।#
Leave a Reply