ইমরান হাসান বুলবুল,ত্রিশাল(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের ত্রিশালে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। দূর্গাপূজার আরো বেশ কিছুদিন বাঁকী থাকলেও প্রতিমা তৈরীতে কোন অবহেলা নেই উপজেলার হিন্দু ধর্মবলম্বীদের মাঝে। এ যেন দুর্গোৎসবের আগেই মহোৎসবের আমেজ!
চলতি বছরে এই উপজেলায় মোট ৬৯টি মন্দিরে উদযাপন হতে চলেছে সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা। উপজেলা সদরে অবস্থিত প্রায় প্রতিটি মন্দিরেই চলছে প্রতিমা তৈরীর উৎসব। বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন মৃৎশিল্পীরা। মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরী করছেন মা দূর্গার প্রতিমা। গত বছরে করোনার প্রভাব থাকার ফলে ঢিলেঢালা ভাবে পালিত হয়েছে দুর্গোৎসব। কিন্তু চলতি বছরে করোনার প্রভাব তেমন না থাকার ফলে দূর্গোৎসব অন্যান্য বছরের আনন্দ মুখর পরিবেশে পালিত হবে বলে জানান অনেকেই।
সরেজমিনে উপজেলার পালবাড়ি, সাহাবাড়ি, হুতারবাড়ি, পৌর মন্দিরগুলো ঘুরে জানা যায়, এবছরে অনেক আগাম প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা। বর্তমান সময়ে তেমন কারিগর সংকট না থাকলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিমা তৈরী করে নিচ্ছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।
মৃৎশিল্পীদে কৈলাস ও গয়ার সাথে কথা হলে তারা জানান, বিভিন্ন জায়গায় রেডিমেড দূর্গা প্রতিমা বিক্রয় হয়। কিন্তু এদিক থেকে ত্রিশাল উপজেলা একদম ব্যতিক্রম। এই অঞ্চলে প্রায় প্রতিটি মন্দিরে প্রতিমা বানানোর পাশাপাশি কিছু প্রতিমা রেডিমেড ক্রয় করা হবে। এবছরে বিভিন্ন স্থানে সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা মূল্যে প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন বলেও জানান তারা। এছাড়াও অনেকে চাহিদা অনুযায়ী এসব প্রতিমার তৈরীর অর্ডার দেন।
প্রতিমা কারিগররা জানান, বর্ষাকালের কথা মাথায় রেখে আগেই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছিল। এজন্য প্রতিমা তৈরির কাজ মোটামোটি শেষের দিকে। এখন প্রতিমাগুলোয় রঙ করাসহ আনুষাঙ্গিক কাজ করা হবে। গতবারের তুলনায় এবার প্রতিমার আকার, ডিজাইনসহ অন্যান্য বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আশা করছি পঞ্চমীর আগেই প্রতিমার সব কাজ শেষ হবে। তবে রঙ ও কারিগরদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় তেমন একটা লাভ হয় না। তারপরও বাব-দাদার পেশা তাই কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
ত্রিশাল উপজেলা সার্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শংকর রায় জানান, ১০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন হবে। পূজার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করছি সরকারী স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবছরেও খুব ভালোভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবো। ত্রিশাল পৌর এলাকায় দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশি থাকে। অনেক দর্শনার্থীরা আসেন প্রতিমা দেখতে। সেই কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ত্রিশাল থানা অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন জানান, প্রতি বছরের ন্যায় হিন্দু ধর্মালম্বীরা সুন্দর ভাবে পূজা উদযাপন করতে পারে সেইজন্য সবধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আশা করছি সরকারী নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়েই দুর্গাপূজা সমাপ্ত হবে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চলতি বছরে এই উপজেলায় মোট ৬৯টি মন্দিরে দুর্গা পূজা উদযাপন হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা তৈরীর কার্যক্রম চলছে। এছাড়াও প্রশাসনিক দিক থেকে সকল প্রকার সহযোগীতা অব্যহত রয়েছে।
Leave a Reply