ইমরান হাসান বুলবুল, ত্রিশাল(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে তিন বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে ‘সংকল্প পাঠাগার’।
উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে উঠা পাঠাগারটি ঐ ইউনিয়নের আলোকবর্তিকা হয়ে কাজ করছে। এ্যাড. মহিউদ্দিন আহমেদ(শাহীন) ২০১৮ সালের ১০ জুলাই গ্রামের মানুষের জ্ঞানের ক্ষুধা মেটাতে গড়ে তোলেন এই পাঠাগারটি।
প্রতিদিন শতশত মানুষ বই পড়তে ভীড় জমায় পাঠাগারটিতে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত পাঠকদের জন্য খোলা থাকে সংকল্প পাঠাগার(সপা)।
এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ হাজার বই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে লেখা বই গুলোই এখানে বেশি।
এমন একটি অজপাড়াগাঁয়ে গড়ে উঠা পাঠাগারে নিয়মিতই রাখা হয় জাতীয় চারটি দৈনিক। দেশ-বিদেশের খবরাখবর রাখতে এবং বিভিন্ন বিষয়ে জানতে নবীন, প্রবীণ সকল বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে পাঠাগার।
পাঠাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান সাদিক জানান, আমি যথাসময়ে নিয়মিতই পাঠাগার খোলা রাখার চেষ্টা করি। আমার একটু পরিশ্রমে এলাকার মানুষ নিয়মিত জ্ঞানের আলো পাচ্ছে এটাতো মহা আনন্দের বিষয়। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততোদিনই এই মহান ব্রতটি করে যেতে চাই।
পাঠাগারের নিয়মিত পাঠক লেখক এসএম মাসুদ রানা বলেন, এই পাঠাগারটি হাতের কাছে পাওয়ায় আমাদের খুব উপকার হয়েছে। টাকা দিয়ে বই কিনে হয়তো নিয়মিত এসব বই পড়া সম্ভব হতো না। ধন্যবাদ জানায় পাঠাগারের উদ্যোক্তা আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান এ্যাড. শাহিন ভাইকে। আমি নিজেও আমার লেখা মুক্তিযুদ্ধের কিশোর উপন্যাস মেঘ-১, মেঘ-২, ভেজা চোখ, তাহমিদের গোয়েন্দা অভিযান, ভূতের জন্মদিন, সুখ সারথি, ভূতের ডিম, নষ্ট মেয়ের গল্প, খোঁজে বেড়াই তারে, লাল সবুজের বঙ্গবন্ধু, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ সহ মোট ৩৪টি বই পাঠাগারটিতে পড়ার জন্য দিয়েছি।
পাঠক রাকিবুল হাসান সুমন বলেন, বই পড়তে সবসময়ই আমার ভালো লাগে। সময়-সুযোগ পেলেই আমিও এখানে বই পড়তে চলে আসি। পাঠাগারে অনেক প্রজাতির বই আছে। আমার অনেক গুলো প্রিয় বই-ই এখানে রয়েছে। আমাদের স্থানীয় লেখক এসএম মাসুদ রানার বই গুলো পড়তে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে।
সংকল্প পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা এ্যাড. মহিউদ্দিন আহমেদ (শাহীন) বলেন, আমি নিজ উদ্যোগেই এই পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করেছি। আমার এলাকার মানুষের বই পড়ার চাহিদা থেকেই আমার এই উদ্যোগ। পাঠাগারটি রেজিষ্ট্রেশন পেয়েছে। অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাঠাগারের জন্য বই দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নিজস্ব জায়গায় এখানে বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।
এই পাঠাগারটি একসময় এই এলাকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহ সকল ভালো কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বলে আমি মনে করি।
Leave a Reply