৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

ডিম দেয়ার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি ইলিশ থেকে ১৬ লাখ ইলিশ উৎপাদন সম্ভব ।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ রিফাত পাটোয়ারী চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

মা’ ইলিশদের যদি ডিম দেয়ার পরিপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া যায় তাহলে ২০০ গ্রামের একটি ইলিশ মাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ ইলিশের বাচ্চা পাওয়া যাবে। পদ্মা নদীর ইলিশ নিয়ে গবেষণা করে দেখা গেছে ১৪০০ গ্রামের একটি ইলিশ যদি ডিম দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে প্রায় ১৬ লাখ ইলিশের বাচ্চা হবে। যদি আর্থিক লাভের কথা চিন্তা করা হয় তাহলে একটি মাত্র ইলিশ থেকে ৭৬ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা আয় হবে।’

ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়ামিন হোসেন। সম্প্রতি শেষ হওয়া তার একটি গবেষণা এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ওই গবেষক ইলিশের সঠিক প্রজনন সময় নির্ধারণ, বংশ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি এবং সংরক্ষণ নিয়ে তার মূল গবেষণাটি করেছেন। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের আর্থিক সহযোগিতায় টানা দুই বছর ইলিশ সংরক্ষণ নিয়ে একটি প্রজেক্টের আওতায় গবেষণা করেছেন তিনি। গবেষণা করতে গিয়ে এই গবেষক বাংলাদেশে ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধকালীন সময় পুণঃনির্ধারণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন তার গবেষণায়।

তিনি বলেন, আমরা গবেষণার মাধ্যমে ইলিশ প্রজননের সঠিক সময় চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। ইলিশের অবস্থান অনুযায়ী অর্থাৎ পদ্মা, যমুনার ক্ষেত্রে মেঘনা, সুরমা, কুশিয়ারার তুলনায় কিছুটা ভিন্নতা, আবার বে অফ বেঙ্গল অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন নদীগুলো থেকে মেঘনা পদ্মার কিছুটা ভিন্নতা আমাদের গবেষণায় উঠে এসছে।

গত ২০২০ সালে ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধকাল শুরু হয়েছিলো ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ঠা নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু পদ্মায় মা ইলিশ প্রবেশ করেছিলো ২০ তারিখের পর। মেঘনার ক্ষেত্রেও দেখা গেছে সময় শুরুর ৪/৫দিন পর মা ইলিশ ডিম দেয়ার জন্য প্রবেশ করেছে। আবার ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধকাল শেষ হওয়ার পরেও এসব নদীতে মা ইলিশের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

আমরা বিগত ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের মাঠপর্যায়ের গবেষণায় দেখেছি যে ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধকাল শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও মা ইলিশ অথাৎ পরিপূর্ণ ডিমে ভরা ইলিশ পদ্মা, মেঘনা, সুরমা, কুশিয়ারায় থেকে গেছে। সুতরাং ইলিশ সম্পদকে রক্ষা করার জন্য আমাদের দেশে যে ২২ দিন ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধকাল নির্ধারণ করা হয় এই সময় নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।

তিনি আরো বলেন, মা ইলিশদের যদি ডিম দেয়ার পরিপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া যায় তাহলে ১৪০০ গ্রামের একটি ইলিশ থেকে ১৬ লাখ ইলিশের বাচ্চা পাওয়া যাবে। এটি শুধু ইলিশের ক্ষেত্রেই সম্ভব। আমরা পদ্মা নদীর ইলিশ নিয়ে গবেষণা করে এমনটা দেখেছি। আমরা যদি আর্থিক লাভের কথা চিন্তা করি তাহলে একটি মাত্র ইলিশ থেকে ৭৬ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা আয় হবে।

তিনি আরো বলেন, ইলিশ গবেষণা করতে এসে আমার কাছে মনে হয়েছে এটি সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ সম্পদের উপহার। এই সম্পদকে রক্ষা করা, যথাযথ ভাবে লালন পালন করা সকলের দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন ,২০২০ সালের জুনে আমাদের ইলিশ গবেষণা প্রকল্পের সমস্ত তথ্য উপাত্ত এবং গবেষণা ফলাফল জমা দিয়েছি। আশাকরা যায় আমাদের গবেষণা ফলাফলের উপর ভিত্তি করে এবার ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধকাল পূণনির্ধারণ করবে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্কোপাস এর জরিপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত সেরা ৫০ জন গবেষকের তালিকায় প্রথমে থেকে সেরা গবেষকের স্বীকৃতি পেয়েছেন ফিশারিজ বিভাগের এই অধ্যাপক তার প্রত্যাশা ‘পুনর্বিন্যস্ত এ নিষিদ্ধ সময়কাল’ দেশের ইলিশ উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সমৃদ্ধকরণ এবং দেশের বাওরগুলোতে পুরনো দেশী মাছ ফিরিয়ে আনাসহ চারটি গবেষণা প্রকল্পে কাজ করছেন তিনি।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।