৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।সোমবার

চুকনগর কৃষকরা পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নিজস্ব প্রতিনিধি,সরদার বাদশ।

 

খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকার গ্রামগঞ্জের রাস্তার দিয়ে হাঁটলে দেখতে পাবেন রাস্তার পাশ দিয়ে নাকে আসছে পাট জাক দেওয়া পচা গন্ধ। কেউ কেউ নাক ঢাকে কাপড় দিয়ে কিন্তু এই গন্ধ যেন কৃষকের নাকে স্বপ্ন পুরোনের গন্ধ,এ গন্ধই জানান দিচ্ছে সোনালী আঁশের বার্তা। চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ পাটের আবাদ করা হয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলাতে। আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। পাটের এমন বাম্পার ফলনে ও দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার তারা বেশি লাভের আশা করছেন। সুদিন ফিরে এসেছে পাট চাষে এমন কথা বলেছেন অনেক কৃষক।

পাট চাষের প্রধান সমস্যা হলো আঁশ পচানোর পানি। অন্য বছর কৃষক পানির পেছনে ছুটলেও এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়াতে তারা পাট ক্ষেতেই পাশে খানা,খন্দপ,নর্দমা বা পুকুরে জাগ দেয়ার কাজ সারছেন কৃষকরা । কৃষকরা জানান পাট মূলত বৃষ্টিনির্ভর ফসল মৌসুমের শুরুতে এবার বৃষ্টি হয়নি। তখন পাটগাছের বৃদ্ধি কিছুটা কম হয়েছে। পাট কাটার সময় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় পাট জাগ দিতে তেমন কোন সমস্যা হয়নি, এতে পরিবহন ব্যয়ও সাশ্রয় হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার পাট চাষে খরচ অনেক কম হয়েছে। গত বছর পানির জন্য পাট জাগ দিতে পারিনি। পাট চাষের মাঝামাঝি সময় তীব্র খরা হওয়ায় চাষ হওয়া পাটের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছিল। এবছর আবহাওয়াতে বৃষ্টিপাত ভালো হওয়ায় কৃষকদের পাট পঁচানো ও আশ ছড়াতে সমস্যা হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই আবাদকৃত ৮০ ভাগ জমির পাট কর্তন শেষ। গতবারের তুলনায় এবার পাটের দাম রয়েছে বেশি, চুকনগর বাজারের পাট ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বলেন গত বছর পাটের দাম ছিল প্রতি মণ ১ হাজার থেকে ১৫০০শ’ টাকা,এবার সেই পাটের দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০০শ`থেকে ২ হাজার ৭০০শত টাকায়।

 

চুকনগর দক্ষিণ গোবিন্দ কাঠি গ্রামের কৃষক শেখ আসাবুর রহমান বলেন তিনি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন, বিঘা প্রতি তার খরচ হয়েছে ৭০০০টাকা তিনি বিঘাপ্রতি পাট পেয়েছেন ১০মন এখন বিক্রি করছে গড়পাট ২৫০০শ’ টাকা আর লালি পাঠ ২৭০০শ’ টাকা।

চুকনগরের কৃষক মেহেদী হাসান বাবলু বলেন দুই বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছেন, বিঘা প্রতি জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ পাট সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৫০০০টাকা থেকে ৭০০০টাকা আর বিঘা প্রতি পাটকাঠি হয় ৮০ থেকে ৯০ আটি। যার প্রতি আটির দাম ৫০থেকে ৬০ টাকা। কৃষকরা যেমন সোনালী আর পাট বিক্রি করে দাম পাচ্ছেন ভালো তেমন পাটের পাটকাঠি বিক্রি করেও দাম পাচ্ছেন ভালো।

ডুমুরিয়ার মাগুরাঘোনার বেতাগ্রামের কৃষক মনো গোলদার বলেন তিনি ৭বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন এবার কৃষকরা বেশি চাষাবাদ করেছে এন,এস,সি,বি,এ,ডিসি-১ ,আর, মহারাষ্ট্র,আই-৮ জাতের পাট। এর জীবনকাল একশ’ থেকে একশ’ ১০ দিন। তিনি বলেন আর কিছু দিন পাটের দাম এমন থাকলেই হবে। কৃষকের কষ্ট কেউ বোঝে না ভাই। দেখা যাবে ক’দিন পরই দাম কমে গেছে। তাইতো তাড়াতাড়ি করে পাট বিক্রি করে দিচ্ছি।

 

ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন ,গেল বছর ডুমুরিয়াতে ৮২০হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল , এবছর পাট চাষ করেছে ডুমুরিয়াতে ৭৬০হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন চাষিরা, গেল বছরের থেকে ৪০হেক্টর পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে ,গেল বছর পাট চাষীদের সংখ্যা ছিল ৩হাজার ,এবছর পাট চাষ করেছে ৭হাজার কৃষক। গেল বছর থেকে এ বছর ৪হাজার কৃষক পাট চাষ করেছে বেশি , এবছর গেল বছরের তুলনায় পাটের দাম একটু বেশি। গেল বছর পাটের দাম ছিল শুরুতে ১৫০০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত এবছর পাটের দাম ২৫০০শত টাকা থেকে ২৭০০টাকা পর্যন্ত, পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি, এবছর কৃষকরা পাটের ভালো দাম পাওয়ায় আগামী বছর পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ আরো বাড়বে পাট দিয়ে পলি ব্যাগের আদলে দেশে ব্যাগ বানানোর প্রক্রিয়া ও চলছে। তিনি আরো বলেন, পাটের মান ভালো রাখার জন্য প্রবাহমান এবং পরিষ্কার পানিতে পঁচানোর জন্য কৃষকদের বলা হচ্ছে। সাথে সাথে সেখানে কয়েক কেজি ইউরিয়া সারও ছিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে । পচানোর ক্ষেত্রে গাছের পাতা বা কাদা মাটি এড়িয়ে চলায় ভালো।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

খুলনার কয়রায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৬ জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনা জেলার আয়োজনে ও কয়রা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম মোহসিন রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আলম।
এসময় আরও উপস্হিত ছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারী, বাঙ্গালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী, আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল সহ সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

নিরাপদ খাদ্যের মূল প্রবন্ধ উপস্হাপন করেন খুলনা জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান।

কয়রায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত।