চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি,নয়ন ঘোষ ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজসাজ রব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই দেবী দুর্গার স্বর্গ থেকে আগমন ঘটেছিল মর্তলোকে। এরই ধারাহিকতায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে। আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা।
এ উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। শারদীয় দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দিরগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ পথে। দেবীকে স্বাগত জানাতে হিন্দু ধর্মালম্বীদের মাঝে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা। বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও খড় দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। আবার কোথাও শিল্পীর সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কৃত্রিম জীবন পাচ্ছেন মা দুর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর ও শিব মূর্তি। কোনো কোনো মূর্তিতে পরানো হয়েছে শাড়ি, হাতের বালাসহ অন্যান্য গয়না। ইতোমধ্যেই প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রঙ ও সাজসজ্জার কাজ বাকি রয়েছে। এসব প্রতিমা শিল্পীরা বিভিন্ন মন্দিরের ভিতরে প্রতিমা তৈরি করছেন। এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলায় ১৪৩টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সরেজমিনে মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরি কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বালিয়াডাংগা ইউনিয়নের নসিপুর ঘোষপাড়াতে শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা শিল্পী জানান, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের প্রতিমা তৈরি করছি। গত বছর থেকে এই বছর একটু কাজের চাপ বেশি। তিনি আরো জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রতিমা তৈরি করে যে মজুরি পান তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টকর। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে চলে গেলেও স্ত্রী সন্তানসহ কাজ করে কোন রকম পরিবার চালাই।
নসিপুর জেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী লক্ষন ঘোষ বলেন, গত বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১২৩টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এবছরে পূজা মন্ডব বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৪৩টি সব পূজামন্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তি শৃংঙ্খলা বজায় রেখে পূজা উদযাপন করবে।
প্রতি বছর সার্বজনীন এই উৎসব
উদযাপন হয়ে থাকে বর্নিল আয়োজনে। উপজেলার আকাশে বাতাসে পূজার গন্ধ যেন ভেসে বেড়াচ্ছে।
আগামী শারদীয় দুর্গা পুঁজা উপলক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূঁজা উদযাপনের জন্য , বিট অফিসার, গ্রাম পুলিশ, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ পূজা উদযাপন কমিটি,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রস্তুত থাকবে।
Leave a Reply