১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।বৃহস্পতিবার

গজারিয়ায় প্রতিশ্রুতি মিলছে অনেক বাস্তবায়ন হয়নি একটিও,আবারও ভাঙন কবলে ইসমানিরচর।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ওসমান গনি ,গজারিয়া প্রতিনিধিঃ

 

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ইসমানিরচর গ্রামে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে দেখা দিয়েছিল ভাঙ্গন আবার পানি হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে পানির টানে আবারও ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,ইসমানির চর গ্রামের নদীর তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। ভাঙ্গন থেকে বাঁচতে বসতঘরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন নদী ভাঙ্গন কবলে পড়া পরিবারগুলো।খরস্রোতা মেঘনা নদী পলি পড়ে গড়ে ওঠা গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়ন।গ্রামের জেলে পাড়ায় অবস্থিত প্রায় অর্ধশতাধিক জেলে পরিবারসহ পাঁচ শতাধিক পরিবারের চোখে মুখে হতাশার চিত্র, বাসস্থান হারানোর ভয়। অথচ নদীর সাথে এ জনপদের মানুষের রয়েছে শত বছরের জীবিকা নির্বাহসহ প্রত্যাহিত প্রানের সর্ম্পক। অথচ ইতিমধ্যে নদীর পাড়ে উপড়ে পড়ছে বৃহৎ গাছ সহ কয়েকটি গৃহ।

 

ভাঙ্গন কবলে বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে চলে যাওয়া মোঃসোরাব হোসেন জানান,পানি বৃদ্ধি আর অবিরাম ঢেউ এর ফলে ভেঙ্গে গেছে পাড় সংলগ্ন বাড়ির দুই তৃতীংশ,বাধ্য হয়ে বাপ দাদার ভিটে মাটি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে।প্রতিবন্ধী রিতা বেগম স্বামী -সন্তানহীন এই নারী বসবাস করেন পিতার রেখে যাওয়া ঘরে।সেই ঘরটিও অর্ধেক নদীর গর্ভে চলে গেছে।চোখে মুখে তাঁর অনিশ্চিত জীবনের ছাপ।আমির হোসেন মোল্লা নামে এক গ্রামবাসী বৈদ্যাতিক খুটি দেখিয়ে বললো,একে তো ভাঙ্গন আতংক দ্বিতীয়ত,যে কোন সময় নদী ভাঙ্গনের ফলে পড়ে যেতে পাড়ে এই খুটি,সার্বক্ষণিক দূর্চিন্তায় সময় কাটে।গবাদি পশু গরু আর ঘোয়াল ঘর নিয়ে চিন্তার শেষ নাই কৃষক মোহাম্মদ হোসেন এর তিনি বলেন,রাত জেগে ঘোয়াল ঘরের পাশে বসে থাকতে থাকতে আমি ও আমার পরিবার অসুস্থ হয়ে গেছি।আমাদের এই অবস্থা দেখার যেন কেউ নাই।

 

বিভিন্ন সময় ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে একাধিক প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দিয়েছিলেন নানান প্রতিশ্রুতি।ইতিমধ্যে পানি বৃদ্ধির সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃজিয়াউল ইসলাম চৌধুরী,এ সময় তাঁরা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে ইসমানির চর গ্রামের নদীভাঙনের শিকার নদী তীরবর্তী মানুষের ভোগান্তির কথা শোনেন এবং এসব এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে এমনটাই আশ্বাস দিয়ে বলেন,ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ স্থান পরিদর্শন করে গেছেন,বিষয়টি উনারা দেখছেন।

 

গত বছর গজারিয়ায় মেঘনা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রান বিতরণ কারতে এসে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেছিলেন,বাংলাদেশের কোথাও নদী ভাঙ্গন থাকবে না,সে সময় তিনি আরো জানিয়েছিলেন গজারিয়ায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী ভাঙ্গন প্রবন দেড় কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন,গত বছর পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম এখানে এসে স্থায়ী বাঁধের ঘোষণা দিয়ে গেলেও এখনো বাস্তবায়নের কোন লক্ষন দেখা যায়নি। বিগত দিনে দেখা গেছে বর্ষা এলেও টনক নড়েনা প্রশাসনের। নদীর পাড়ের মানুষকেই তখন তড়িগড়ি করে নদীর পাড়ে বাঁশ ও বালির বস্তা ফেলে বাপদাদার ভিটা রক্ষার বিফল চেষ্টা করতে হয়।

 

মুন্সীগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান,এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য আমরা জরিপ ও নকশা প্রণয়নের কাজ সম্পূর্ণ করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি,আর অস্থায়ী ভাবে জিও ব্যাগের জন্য ফান্ড চেয়েছি। আশা করি অচিরেই ভাঙ্গন কবলিত অংশে কাজ শুরু করতে পারবো।

স্থানীয় সচেতন মানুষও মনে করে অসহায় পরিবার গুলোকে রক্ষার্থে ভাঙ্গন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে এখনি কোন পদক্ষেপ না নিলে ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসবে অসহায় খেটে খাওয়া দিনমজুর পরিবার গুলো।

 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসূল বলেন,জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে প্র য়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।