অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ
খুলনার কয়রায় খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের উপজেলা সভাপতি খোকন মণ্ডলের বিরুদ্ধে নামে বেনামে বিভিন্ন ফাউন্ডেশন, সমবায় সমিতি, গির্জা দেখিয়ে ও চাকরী দেওয়ার নামে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন দূর্নিতির অভিযোগে বিভিন্ন মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কয়রার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা খোকন মণ্ডল, পিতা- মৃত গুনধর মণ্ডল (ঋষি), সাং- মদিনাবাদ, উপজেলা – কয়রা, জেলা- খুলনা। সে নিজেকে এনজিও কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে (১) দীপ্ত উন্নয়ন ফাউণ্ডেশন, (২) হোসান্না শ্রমজীবী সমবায় সমিতি, (৩) সহানুভূতি শ্রমজীবী সমবায় সমিতি, (৪) অঙ্কুর শ্রমজীবী সমবায় সমিতি ও (৫) সোস্যাল কনসার্ন কোঅপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড নাম করণ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবণের ২য় তলায় ১০৩ নং রুম ভাড়া নিয়ে বিলাসবহুল অফিস কক্ষে এই সকল সমিতির মাধ্যমে সদস্য ভর্তি করে উপজেলার গরীব সাধারন কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের নিকট থেকে ঋণ দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা সঞ্চয় জমা হলে আইন বহির্ভূত ভাবে সমিতির নাম পরিবর্তন করে আবারো সঞ্চয় জমা নিয়ে ঋণ দেওয়ার কথা বলে অলিখিত ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে ঋণ না দিয়ে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে।
কয়রা মদিনাবাদ সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উদয় মণ্ডল বলেন, খোকন মণ্ডল সমিতিতে চাকরী দেওয়ার নাম করে আমার ভাগিনে সুব্রত বাউলিয়াসহ এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক- যুবতীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে চাকরী না দিয়ে বর্তমানে পালাতক আছে।
বাগালী ইউনিয়নের সমাজ সেবক ডাঃ পতিত পাবন মণ্ডল বলেন, পালাতক খোকন মণ্ডল নিজেকে খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের উপজেলা সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের কমিটি করে হত- দরিদ্র হিন্দু মুসলিমদের জমি, ঘর এবং মোটা অংকের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে খ্রিস্টান ধর্মে কনভার্ট করা সহ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় দিনে (২৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য উপজেলায় মাত্র ৩/৪ টি অচল গির্জা থাকলেও ১৫/২০ টি সচল গির্জা (চার্চ) দেখিয়ে সরকারি ও বিভিন্ন সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের টাকা সহ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। আর এই অনিয়ম – দূর্নিতির কাজে তার সাথে থেকে তাকে সহযোগিতা করে আসছে তার আপন ভাই মনোরঞ্জন মণ্ডল ( ঋষি) ও তার ছেলে সবুজ মণ্ডল (ঋষি)।
এছাড়া জমি-জমাসহ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদের প্রতারণার অভিযোগ আছে সবুজ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ।
এ বিষয়ে কয়রা থানা ও কয়রা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোটের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাক্তি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। যার নং- জি আর- ২৫৬/১০ (আশাশুনি), সি আর ১২৭/২২ (কয়রা), এম আর- ৭০/২২ (কয়রা), এম আর ২৭৮/২১ (কয়রা), সি আর- ৭৩০/২২ (কয়রা), সি আর- ৪৯৭/২২ (কয়রা), দ্রুত সি আর- ৫/২৩ (খুলনা) সহজ অনেক মামলায় গ্রেফতারী ওয়ারেন্টের আসামী তিনি।
তাই প্রসিডিওর কোড ১৯৯৮ এর ৮৭/৮৮ ধারার বিধান মোতাবেক ও সি আর – ৫/২৩ খুলনার দ্রুত বিচার আইনের ৬ ধারায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হওয়ায় তিনি পালাতক বা আত্মগোপনে রহিয়াছেন।
তাই উক্ত কোডের ৩৩৯ বিষয় (১) ধারার বিধান মতে তাহাকে উল্লেখিত মামলায় বিচারের জন্য এই আদেশ জারী হইবার ১০ (দেশ) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হইবার নির্দেশ দেওয়া গেল। অন্যথায় তাহার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হইবে। যাহার তারিখ ঃ ২২/১১/২৩ খ্রিঃ, স্মারক নং- ৪৬৫৩।
কয়রা, খুলনা প্রতিনিধি
তারিখ ঃ ০২/১২/২৩ ইং।
Leave a Reply