১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।মঙ্গলবার

কয়রায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষক গোপালের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ

 

কৃষি বিপ্লবে যুক্ত হয়েছে উচ্চফলনশীল “গ্রীষ্মকালীন টমেটো’ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত উন্নতজাতের এই সব্জীকে সামার টমেটোও বলা হয়ে থাকে। তারই ধারাবহিকতায়, খুলনার কয়রা উপজেলায় সাদা পলিথিন ও বাঁশের ছাউনি দিয়ে শেড তৈরী করে আধুনিক প্রযুক্তিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন কৃষক গোপাল সরকার।

অসময়ে টমেটো চাষ করে দামও পাচ্ছেন ভালো। বাড়ছে চাষের পরিধি। অন্য কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন টমেটো চাষে। প্রায় ২৫ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন বারি হাইব্রিড টমেটো ৪ ও ৮ জাতের টমেটোর চারা রোপন করেছেন তিনি। এজন্য প্রস্তুত, সার, ঔষুধ ও পরিচর্ষা বাবদ কৃষকদের সহযোগিতা করেছেন সরেজমিন গবেষণা বিভাগ। ভাল ফলনের আশায় গোপাল সরকার ও তার স্ত্রী টুম্পারানী সরকার দিনের বেশির ভাগই সময় ব্যয় করেন জমিতে। লাভের আশায় চাষ করা এই টমেটোকে ঘিরে তার এই দিন রাত খাটুনি। সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের বাসিন্দা গোপাল সরকার ও তার স্ত্রী টুম্পারানী সরকার টমেটো ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত। সেই সময় টমেটো চাষে পরামর্শ দিতে যাওয়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পরার্মশককে দেখে তিনি এগিয়ে আসেন এবং তার কাছে পরামর্শ চান। তার থেকে পরামর্শ পেয়ে আনন্দিত এ কৃষক। কৃষক গোপাল সরকার বলেন, প্রায় ২৫ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন বারি হাইব্রিড টমেটো ৪ ও ৮ জাতের টমেটোর চারা রোপন করেছি। শুরু থেকেই সারাদিন চারাগুলোর যতœ নেই। কৃষক বলেন টমেটো চাষে সার, বীজ, কীটনাশক বাদে সব মিলিয়ে এখানে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আরও বলেন গত দুই সপ্তাহ থেকে ক্ষেত থেকে পাকা টমেটো তুলে বাজারে বিক্রি শুরু করেছি এবং ইতোমধ্যে ২৫ হাজার টাকার মত বিক্রি করেছি। এখানকাার বাজারদর হিসেবে ফলন অব্যাহত থাকলে আর কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এই ফসল বিক্রি করে এক লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ টাকা আসবে বলে আমার ধারনা। কারণ বর্তমান বাজারে টমেটোর প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমএলটি সাইট কয়রার বৈজ্ঞানিক সহকারি জাহিদ হাসান জানান, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ বেশ লাভজনক। সরেজমিন গবেষণা অফিস থেকে সবসময় কৃষকদের টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষক গোপাল ও তার স্ত্রী পরিশ্রম করতে পারেন তাই এ কৃষকসহ কয়রায় আরও অনেক কৃষককে টমেটো চাষে উৎসাহ দিয়েছিলাম। তারা উৎসাহিত হয়ে বারি হাইুব্রড টমেটো ৪ ও ৮ জাতের টমেটো চাষ করেছেন। আমরা আশা করি তারা লাভবান হবেন। গবেষণা বিভাগ উপজেলার টমেটো চাষিদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। তাই আমরা কৃষকের কাছে গিয়ে তাদেরকে উৎসাহ করছি। আমরা চাই কৃষকরা বারোমাস ফসল চাষ করুক।

খুলনা অঞ্চলের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনর রশিদ বলেন, যশোর বাঘার পাড়া থেকে এক কৃষকের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই সময়ের টমেটো চাষ কার্যক্রম শুরু করি। তবে এর ব্যাপকতা বেড়েছে গত তিন বছরে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প গোপালগঞ্জের বারির কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় আমরা কয়রার কৃষকদের উন্নয়নে সেখানে কাজ করছি। এ বছর ৫ টি জেলায় ১৬ কেজি টমেটোর বীজ বিতরণ করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে টমেটো চাষ হত না, শীতকালে হতো। গ্রীষ্মকালে ভারত থেকে টমেটো আসত। সেটার মধ্যে স্বাদ ছিল না। আমরা নিজেরা এই টমেটো আবিস্কারের ফলে আমরা চাই বিদেশ থেকে কোন টমেটো না আসুক। আমাদের কৃষকরা ভাল দাম পেয়ে লাভবান হোক। একই সাথে আমরা বিষমুক্ত টাটকা সবজি খেতে পারছি। শুধু তাই নয়, টমেটোতে রয়েছে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, সহ অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।

কয়রা, খুলনা প্রতিনিধি

তারিখ ঃ- ১৬/০৯/২১ ইং।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ঃ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের সড়ক দূর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে দশটায় শ্যামনগর উপজেলা সদরের নিকবর্তী গোপালপুর সড়কে কুলখালী নামক স্থানে দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রাত সাড়ে দশটায় নিজ বাইসাইকেল যোগে নিজ বাড়ী উপজেলার নুরনগর ইউপির নুরনগর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় গোপালপুর মুক্তিযোদ্ধা সড়কে কুলখালী নামকস্থানে নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের গর্তে সাইকেল সহ পড়ে যান। নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের বাহিরে বের হওয়া লোহার রড তার মাথায় ছিদ্র হয়ে ঢুকে যেয়ে এক পাশ থেকে অপরপাশে বের হয়ে যায় পর স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর প্রেসকাবের সাবেক সভাপতি আকবর কবীর বলেন কিছুদিন পূর্বে এই বক্স কালভার্ট তৈরী করতে যেয়ে একই সড়কে মোমিন মল্লিক নামে এক শ্রমিক মারা যান। তিনি আরও বলেন  নির্মানাধীন বক্স কালভার্টের  ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন এস এম আবুল বাসার।

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস এম আতাউল হক দোলন, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবের আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ, সুন্দরবন প্রেসকাবের সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

ছবি- নিহত নীলাকাশ টুডের সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান।

রনজিৎ বর্মন
তাং-২৭.৭.২৪

নীলাকাশ টুডের সম্পাদক নুরুজ্জামান সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত।