রবিউল হোসাইন সবুজ,কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় বিভিন্ন হাট-বাজারে আসন্ন মরা কার্তিক মাস ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা দামে বড় তফাৎ এবং পণ্যের বাজারে আগুন পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত পণ্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। নানান অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে সকল পেশার মানুষ ওইসবব্যবসায়ীর হাতে হচ্ছেন প্রতারিত। মহামারী করোনাকালেও ওই সব ব্যবসায়ীর দৌরাত্ম্য কমাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বিগত দেড় বছর যাবৎ মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের আয় নেই বললেই চলে। হাট-বাজারগুলোতে চাল. ডাল, চিনি, গরম মসসা, ভোজ্যতৈলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে বাজার মনিটরিংয়ের কোনো বিকল্প নেই এবং স্থানীয় প্রশাসনের বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত কঠোরভাবে জোরদার করা উচিত ছিল। সেটা কিন্তু হয়নি। স্থানীয় মজুদদার ব্যবসায়ীরা কৌশলে লাগামহীন ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। অথচ এ ব্যাপারে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।
উপজেলার একাধিক ভুক্তভোগী জানায়, পাইকারি আড়তে বিভিন্ন পণ্যের দামের বিপরীতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পণ্যের দাম ১৫-২০ টাকা বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো ৫-১০ টাকা বেশি দাম দিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হয় ক্রেতাদের। পাইকারি বাজারে চিনি ৭০-৭২ টাকা, খুচরা বাজারে ৭৫-৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০-৩২ টাকার স্থলে ৩৫-৪০ টাকাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রত্যেকটির কেজি ১০-১৫ টাকা পার্থক্য রয়েছে। মৌসুমী ফল, কাঁচা সবজি, ও গরম মসলার বাজার অনেকটা সাধারণ মানষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। নতুন নতুন সবজি ৫০-৬০ টাকার নিচে কোনো তরকারি পাওয়া যায় না। অথচ দেশের বিভিন্ন জেলায় কাঁচামালের মোকাম কিংবা উৎপাদন স্থানে দাম তার অর্ধেক। শসা, শিম, টমেটো ও বেগুনসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর অশুভ প্রতিযোগিতায় নেমেছে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা।
সূত্রগুলো আরো জানায়, গতকাল রোববার মুসুর ডালের পাইকারি বাজার ছিল ৯০-৯৫ টাকা, খুচরা ১১০-১৪০ টাকা। ভোজ্যতেল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। লাকসাম পৌর শহরের বাইরে বিভিন্ন পণ্যের মূল্য পাইকারি দামের চেয়ে খুচরা বাজারে কোনো কোনো পণ্যে প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাল, চিনি ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে আগের মতোই ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য রয়েছে। ক্রেতাদের কাছে এটা অস্বাভাবিক হলেও দোকানদাররা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। বিভিন্ন পণ্যের বাজারে প্রতি কেজি সর্বচ্চো ২-৫ টাকা পর্যন্ত কম-বেশি হতে পারে। কিন্তু হাট-বাজারে প্রচুর মালামালের সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও পণ্যের বাজারমূল্যে স্থানীয় বিভিন্ন পণ্য সেন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাতবদল ও কমিশন বাণিজ্যের কারণে ক্রেতাদের প্রতারিত করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে ওইসব ব্যবসায়ী।
গরম মসরার বাজারেও আগুন। মুদি মালামালে কোনো অজুহাত ছাড়াই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মূল্য। মাছ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মুরগি, গরু, খাসির মাংস ক্রয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বািইরে। এছাড়া ভেজাল খাদ্যদ্রব্য তো আছেই।
এ ব্যাপারে উপজেলার স্থানীয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে জানতে চাইলে তারা জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানালেও পণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে মুখ খুলতে নীরব দর্শক হলেও সন্দেহের তীরটা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দিকে ইংগিত করে বলছেন ভিন্ন কথা।
Leave a Reply