মোঃ রোকনুজ্জামান রাসেল, কাজিপুর প্রতিনিধিঃ
কাজিপুর উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নে “জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন সংস্থা” নামের ভুয়া একটি সংস্থা চাকরি দেয়ার প্রলোভনে ৭ জন নারীর কাছে থেকে থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে।
ইউপি সচিব আল আমিন জানান, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক স্বাক্ষরিত একটি সহযোগিতা প্রত্যাশিত চিঠিসহ হাবিবুর রহমান ও ফারুক আহমেদ নামের দুজন ব্যক্তি নিজেদের সংস্থাটির পশু ডাক্তার ও ট্রেইনার পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করে। তারা জানায় হাঁস মুরগী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ জন করে মাঠকর্মী ৬ হাজার ৫ শত টাকা বেতনে এবং ইউনিয়নে ১ জন সুপারভাইজার ৯ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দেয়া হবে।
সে লক্ষ্যে গত ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর ইউপিতে নিয়োগ প্রত্যাশিদের ট্রেনিং করায় তারা। গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পত্র প্রদানের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও ঐ দিন সকাল থেকে তাদের সকল মোবাইল নাম্বার বন্ধ রেখেছে। চিঠির সূত্র অনুযায়ী সংস্থাটি চুয়াডাঙ্গা ২০৮/০৩ নাম্বারে নিবন্ধিত। উল্লেখ্য যে, একই সময়ে প্রতারকরা কাজিপুর সদর ইউপিতে ফাঁদ পাতলেও কেউ সাড়া দেয়নি নিশ্চিত করেছেন কাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান।
ভুক্তভোগী নয়াপাড়া গ্রামের ফারিহা খাতুন ও পূর্ব খুকশিয়া গ্রামের তানিয়া আক্তারসহ অন্যরা জানান, ইউপি সচিবের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি হাঁস-মুরগির চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৩৬ মাসের জন্য জনবল নিয়োগ করা হবে। ২৭-সেপ্টেম্বর ২০মিনিটের একটি প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। একই তারিখ বিকেলে হাবিবুর ও ফারুক মোবাইল ফোনে কল করে জানায় ২ ইউনিয়নের জন্য ১ জনকে ব্লক সুপারভাইজার পদে নিয়োগ দেয়া হবে যার বেতন ২৬ হাজার ৫ শত টাকা। ১ মাসের বেতন সমপরিমাণ টাকা উৎকোচ দিলে তাকে নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগের বিষয়টি গোপন রাখার শর্ত দিয়ে ৭ জনের সাথে প্রতারণা করে। লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতারকরা নগদ, বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান জানান এই নামের কোনো সংস্থা কাজিপুরে প্রাণিসম্পদ নিয়ে কাজ করেনা।
এবিষয়ে গান্ধাইল ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,
ভুক্তভোগী ৭ জন পরিষদের সাথে পরামর্শ না করে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছে। বিষয়টি ইউএনও কে মৌখিকভাবে অবগত করা হয়েছে, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
ইউএনও জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন,
ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অবগত হয়েছি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে বিজ্ঞজনেরা মনে করেন, যেহেতু ইউনিয়ন পরিষদের উপর সকলের অবিচল আস্থা আছে, তাই এসব ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি, সচিব এবং সংশিষ্ট কর্মচারীদের আরও সতর্ক ও দায়িত্ববান হওয়া দরকার। এই ভূয়া সংস্থার ব্যাপারে তাদের আরও খোঁজখবর নিয়ে কাজ করার অনুমতি দিলে এ ধরণের ঘটনা ঘটতো না বলে এলাকাবাসী মনে করেন।
Leave a Reply