আনোয়ারা উপকূলে জমে উঠেছে রূপালী ইলিশের মেলা
শেখ আবদুল্লাহ
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
বেশ কিছুদিন বাজারে দেখা যায়নি তেমন একটা ইলিশের আনা-গোনা কিন্তু হঠাৎ করেই বাজারগুলোতে জমে উঠেছে রূপালী ইলিশের বাজার।
ইলিশের ভরা মৌসুম হওয়ায় এমন অবস্থা বলে মনে করছেন সবাই।দীর্ঘ ৬৫দিন সাগরে নিষেধাজ্ঞা থাকার পর সাগরে নেমে আশানরূপ ইলিশ মিলেনি আনোয়ারার ১০হাজার জেলেদের জালে। ভরা মৌসুমে ৬শত ট্রলার নিয়ে সাগরে নেমেছিল উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। তবে ইলিশ না মিলায় হতাশমনে দ্বিতীয় পূর্ণিমার আশায় ছিল এসব জেলেরা। তবে এবার আর হতাশ হতে হয়নি। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার শুরু থেকে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ।
জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে আনোয়ারা উপকূলে জমে উঠেছে এখন রূপালী ইলিশের মেলা।
দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তেমন বড় আকারে ইলিশ জালে ধরা পড়ছেনা বললেই চলে । তবুও ছোট ও মাঝারি আকারের ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের চোখে-মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে ওঠেছে।
গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকালে উপজেলার গহিরা উপকূলীয় এলাকার উঠান মাঝির ঘাট, দোভাষী ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই দিনে সাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে অর্ধশতাধিক ট্রলার। ফিরে আসা ইলিশ ভর্তি এসব ট্রলার গহিরা উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে সারিবদ্ধভাবে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণে মাঝিমাল্লাদের মাঝে ছিলো সংরক্ষণে তোরজোড় ।
মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখে।
ঘাটকূল এলাকায় দেখা যায়, কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে।
ট্রলার থেকে মাছ নামতেই জেলেরা ডাক বসাচ্ছেন মাছের দামের ।
এদিকে উপজেলার মাছের সব চেয়ে বড় আড়ৎ কালাবিবির দিঘির মোড়ে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ গ্রাম সাইজের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৫০০ টাকায়। প্রতি তিন পিসে কেজি এমন ইলিশ প্রতিকেজি সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, ছোট জাটকা প্রতিকেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দৌভাষী ঘাট মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা বলেন, এক সপ্তাহ আগে যে ইলিশ ২ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এখন সেগুলোর হালি ২৫০০ হাজারের হাকাচ্ছে । তার মতে, বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে । সরবরাহ বাড়লে ইলিশের দাম কমে আসবে।
উঠান মাঝি ঘাটের বাজারের ইলিশ বিক্রেতা আরমান জানান, ইলিশের মৌসুম হলেও অন্য বছরের তুলনায় এ সময় ইলিশ ধরা পড়ছে কম। এ কারণে বাজারে ইলিশের দাম উঠা নামা করলেও অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।
উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রী কৃষ্ণ দাশের বলেন, মূলত সাগরে মিষ্টি পানি নামার সাথে সাথে গভীর সমূদ্র থেকে বড় মাছগুলো কাছে চলে আসে আর তখনি জেলেরে জালে আটকা পড়ে যায়, আর এবছর বৃষ্টি হওয়ার পরও জেলেদের জালে প্রথম দিকে মাছের দেখা মেলেনি । আজ থেকে জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে উপকূলে জমে উঠতে শুরু করেছে ইলিশের আমেজ। আশা করি আগামী পূর্ণিমাতে জেলেদের জালে আরো ভালো মাছ পরবে।
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন, আসলে আমরা সরেজমিনে বিষয়টি গিয়ে দেখেছি, জেলেদের জালে তেমন আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি প্রথম দিকে । ভাদ্র মাসের শুরু থেকে মাছ ধরা পড়েছে । আর যেসব মাছ পরতেছে তা সাইজে অনেক ছোট। জো-এর দিনক্ষণ মিলিয়ে সামনে আরো পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
Leave a Reply