শাহাবুদ্দিন মোড়ল ঝিকরগাছা (যশোর) :
আধুনিক কৃষির ধারণা থেকে নিজের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ভারতের বারি মহারাষ্ট্র-১ জাতের পাট চাষ করে মাত্র ৯০ দিনে সফল হয়েছে তরুণ উদ্যোক্তা মিঠুন সরকার (২৩)। সে উপজেলার সন্তোষনগর গ্রামের মৃত দিলীপ সরকারের ছেলে। ৩০ জুন ২০২০ এ লিভার জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরলোক গমন করেন। বাবার মৃত্যুতে তার উপর শোকের ছায়ালেগে থাকলেও মায়ের ভালোবাসার পরশে সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। তবুও তার পড়াশুনা থেমে যায়নি। বর্তমানে মিঠুন সরকার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যশোর আঞ্চলিক কেন্দ্রের ঝিনাইদহ এগ্রিকালচারাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে ‘ব্যাচেলর অব এগ্রিকালচারাল এডুকেশন” এ অধ্যায়নরত। পড়াশুনার পাশাপাশি বাবার রেখে যাওয়া ৬৯ শতাংশ দু ফসলী জমিতে তিন ফসলীতে পরিণত করে ক্রমাগতই আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে এবং এলাকার মধ্যে একজন সফল উদ্যেক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সে লাইনিং পদ্ধতিতে পাটের বীজ বপন করে কাঙ্খিত ফলন ঠিক রেখে মাত্র ১২৫ দিনের পাট চাষকে ৯০ দিনে নিয়ে এসে এলাকার মানুষের মাঝে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। লাইনিং পদ্ধতিতে তার জমিতে পাট চাষ করে শ্রমিক, সেচ এবং সার কম লাগে ও বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় অন্যান্যদের চেয়ে বিঘাপ্রতি উৎপাদন ব্যয় কমেছে শতকরা ৫০ শতাংশ। এছাড়াও উৎপাদন হয়েছে বিঘাপ্রতি প্রায় ১২মণ পাট।
এ বিষয়ে তরুণ উদ্যোক্তা মিঠুন সরকার বলেন, ‘আধুনিক পাট চাষে সফলতার পিছনে নিজের মেধাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এছাড়াও উপজেলা কৃষি অফিসার ও গবেষণা কাজে সব সময় উৎসাহ এবং সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে এসেছে ঝিনাইদহ এগ্রিকালচারাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট’।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, আমাদের উপজেলার অর্ন্তগত মাগুরা ইউনিয়নের ক্ষুদে একজন উদ্যোক্তা হলো মিঠুন সরকার। সে এমাগতই চাষাবাদের মাধ্যমে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। একজন উদ্যোক্তার সফল হতে যে গুন দরকার হয় সেটা তার মধ্যে রয়েছে। আমি আশাকরি সে তার লক্ষ্য পূরণ করে একদিন উপজেলার মধ্যে সফল উদ্যোক্তা হবে।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যশোর আঞ্চলিক কেন্দ্রের ঝিনাইদহ এগ্রিকালচারাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের কো-অর্ডিনেটিং অফিসার এমএস শাহনাজ ফেরদৌস বলেন, ‘ আমরা প্রতিটা শিক্ষার্থীদের সমান গুরুত্বের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণের মাধ্যমে পাঠদান করে থাকি। মিঠুন সরকার সবসময় আমাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে গবেষণার সার্বিক পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। তাঁর এ সাফল্যে আমরা গর্বিত।
Leave a Reply